উদযাপনে ভুলে যাওয়া ‘সুন্দরবন দিবস’

বিশ্ব জলবায়ু রক্ষায় সারা পৃথিবীর সচেতন পরিবেশবাদীরা যখন নিরন্তর প্রচেষ্টায় ব্যস্ত। এমনকি এই কাজে সামর্থ্যের সবটুকু উজার করে দিয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে খোদ জাতিসংঘ। ঠিক তখনই ভালোবাসা দিবস আর ফাগুনের উচ্ছ্বাসে মানসুন্দরবন দিবস। অথচ দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলেরজলবায়ু নিয়ন্ত্রণের অন্যতম নিয়ামক বিশ্বের সর্ব বৃহৎ এই ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা লবণাক্ত বনাঞ্চল সুন্দরবন বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলীর অন্যতম প্রশস্ত বনভূমি। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল এই বনাঞ্চল সংরক্ষনের উদ্দেশে নির্ধারিত সুন্দরবন দিবস।

ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসার কথা ভুলে গেছেন অনেকেই। তবে সম্প্রতি যে কয়টি প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে দক্ষিণ এশিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে। তার প্রত্যেকটির বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে সুন্দরবন। রক্ষা করেছে হাজার হাজার মানুষের জীবন। সেই সঙ্গে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য প্রতিনিয়তই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে অত্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থান রক্ষায়। এই সুন্দরবন কে সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতেই ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস পালিত হয়ে আসছে।

২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। সে হিসেবে এবারও পালিত হচ্ছে ‘সুন্দরবন দিবস’।

বরাবরের মতো এবারেও সুন্দরবন দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি হচ্ছে খুলনায়। দিবসটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সুন্দরবন রয়েছে ৫ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ৩০ প্রজাতির চিংড়ি মাছ রয়েছে।

প্রতিনিয়ত বনখেকোদের আগ্রাসনের ফলে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন আজ হুমকির মুখে। সুন্দরবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ গোটা দেশের পরিবেশ। তাই এ বন রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং এক সঙ্গে কাজ করতে হবে প্রকৃতিকে ভালোবেসে।সুন্দরবন দিবস'