kalchitro
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
মুক্তির মহানায়ক উদযাপন

ধন্য মুজিব ধন্য


কালচিত্র প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২০, ০৯:০১ পিএম ধন্য মুজিব ধন্য
ছবি- কালচিত্র

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশাপাশি সারা দেশে একযোগে আতশবাজির মধ্য দিয়ে উদযাপন হলো ‘মুজিব জন্মক্ষণ’ উদযাপন। একই সঙ্গে শুরু হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিবর্ষের অনুষ্ঠানমালা।

 

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) রাত ৮টায় বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণে আতশবাজির মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

‘মুক্তির মহানায়ক’ শীর্ষক অনুষ্ঠান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রেকর্ডকৃত ভাষন পরিবেশন করা হয়। ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত করে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

এর আগে ১০০ শিশুর কণ্ঠে পরিবেশিত হয় সূচনা সঙ্গীত ‘ধন্য মুজিব ধন্য’।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি

ভিডিওবার্তায় শুভেচ্ছা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত করে গান ও কবিতা পরিবেশন করেন দেশসেরা শিল্পীবৃন্দ।

করোনাভাইরাস জনিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে ‘মুজিববর্ষ’ এর অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করা হয়।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।

এর আগে অনুষ্ঠানের সূত্রধর ছিলেন সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। 

দিনভর নানা আয়োজন

দিনভর নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

দিনটিকে দেশব্যাপী ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এই নেতা ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে ভোর ৬ টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়।

অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কেক কাটা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, মোনাজাত, প্রার্থনা, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে চিকিৎসা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, করোনাভাইরাসের প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ ইত্যাদি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমেই রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সামনে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা ও প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ হোসেন তার সাথে উপস্থিত ছিলেন।

জাতির পিতার প্রতিকৃতির বেদিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের পর স্বাধীনতার এই মহান স্থপতির প্রতি সম্মান জানাতে প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে আরেকবার পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও মোজাফফর হোসেন পল্টু, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলির সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপুমনি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেলক হক ও মির্জা আজম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ দলের অন্যান কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পৃথকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের নেতৃত্বে (পিএমও) কর্মকর্তাবৃন্দও শ্রদ্ধা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ভবন এলাকা ত্যাগ করার পর আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্যজীবী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।

পরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড-অব-অনার প্রদান করে।

পরে আবদুল হামিদ এবং শেখ হাসিনা ফাতেহা পাঠ করেন ও জাতির পিতা এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট শহীদদের আত্মার শান্তি কামণা করে বিশেষ মোনাজাতে শরিক হন।

এ সময় জাতির পিতার ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন এবং শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার ছিল সরকারি ছুটির দিন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সারাদেশের সব সরকারি হাসপাতাল রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি আজিমপুরে এতিমখানায় শিশুদের মাঝে খাদ্য, বস্ত্র ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

তেজগাঁও গির্জায়, মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রিস্টান সম্প্রদায়, রাজধানীর মেরুল বাড্ডাস্থ আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বনানী করাইল বস্তিতে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এতিম ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাবার ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

বাদ আসর রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ দুস্থদের দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাবার ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

Side banner