সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর নিয়ে জানা যায়, মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের ক্ষমতা রাখায় এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংস্পর্শে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি মাথায় রেখেই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ বিভাগ এবং কার্ডিওকেয়ার জেনারেল এন্ড স্পেশালাইজড হাসপাতালের একদল গবেষক কাজ শুরু করেন এমন কোনো সফটওয়্যার সিস্টেম উদ্ভাবনের যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির দেহে করোনার উপস্থিতি আছে কিনা তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। শেষ পর্যন্ত গবেষকদের এই প্রচেষ্টা দেখেছে সাফল্যের মুখ। আর সেই সঙ্গে বিশ্বের প্রথম করোনা শনাক্তকারী সফটওয়্যার প্রযুক্তির উদ্ভাবক রাষ্ট্র হিসেবে এক অনন্য উচ্চতায় ঠাঁই পেল বাংলাদেশ। এর ফলে জনপ্রতি করোনা টেস্টিং কিট ব্যবহারের ঝামেলা ছাড়াই সম্ভব হবে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা। একই সঙ্গে এ কাজে সর্বোচ্চ সাফল্য প্রাপ্তির সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।
এই অনন্য উদ্ভাবনের কৃতিত্বধারী বাংলাদেশের গবেষকরা হলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অ্যালাইড হেলথ সায়েন্স অনুষদের সহযোগী ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসের জাফর উল্লাহ, পাবলিক হেলথ বিভাগের প্রধান ড. এবিএম আলাউদ্দিন চৌধুরী, মো. লিয়াকত আলী, মো. হাবিবুর রহমান, মো. নাসের ও মো. মেহেদী হাসান।
উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটির প্রাসংগিক দিক আলোচনাকালে গবেষকরা জানান, ফুসফুসের বিভিন্ন জটিল রোগ নির্ণয়ে রেডিওলোজি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কোভিড-১৯ নির্ণয়েও রেডিওলোজি তথা ‘চেস্ট রোডিওলোজি’ মডেল এবং কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব।
তারা আরও জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এমন একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছেন যে সফটওয়্যারটি রোগীর বুকের এক্সরে এবং ফুসফুসের সিটি স্ক্যানের ছবি বিশ্লেষণের মাধ্যমে ‘কোভিড-১৯’ সনাক্ত করতে সাহায্য করবে।
উদ্ভাবক দলের গবেষণায় জানা গেসছে, এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থাতেই শতকরা ৯৬ ভাগ সঠিকভাবে ‘কোভিড-১৯’ রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হবে।
গবেষকরা সফটওয়্যার তৈরির পাশাপাশি একটি ওয়েবসাইটও নির্মাণ করছেন। যথাযথ কর্তপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে এই ওয়েবসাইটে রোগীর এক্সরে ছবি আপলোড করার মাধ্যমে কোভিড-১৯ সহ যেকোন ফুসফুসজনিত রোগ সনাক্ত করা সম্ভব হবে। এই অসামান্য উদ্ভাবন ঘরে বসেই রোগিদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানের এক অনন্য মাইলফলক সৃষ্টি করলো। তবে তাদের এই সাফল্যের পর দেশজুড়ে সাধারনের পক্ষ থেকে আসছে সাধুবাদ।
এই 'টেক টাইগার্স'দের অনন্য সাফল্যে সুনিশ্চিতভাবেই গর্বিত বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে কারও কারও মনে এই আশার আলোও জ্বলতে শুরু করেছে যে, এভাবেই হয়তো যে কোনো মুহূর্তে কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক উদ্ভাবনে সারা বিশ্বকে চমকে দেবে কোনো একদল বাংলাদেশি গবেষক। এত বড় উদ্ভাবনি সাফল্যের পর মানুষের এমন প্রত্যাশা একেবারে অমূলক নিশ্চয় বলা যাবে না।
আপনার মতামত লিখুন :