মাসুম খান
বাংলাদেশের গ্রামীণ জনজীবনের সঙ্গে মঙ্গলকাব্য উৎপত্তভাবে জড়িয়ে আছে। এই মঙ্গলকাব্যগুলি বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাসে ড. আশুতোষ ভট্টাচার্য বলেন, ‘খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত কবি ভারত চন্দ্রের সময় পর্যন্ত বঙ্গসাহিত্য যে বিশেষে এক প্রকার সাম্প্রদায়িক (sectarian) সাহিত্য রচিত প্রচলিত হয়- তাই বঙ্গসাহিত্যের ইতিহাসে মঙ্গলকাব্য নামে পরিচতি।’সময় বিচারে মঙ্গলকাব্যের সময় ধার্য হলেও খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর পূর্বেই মঙ্গলকাব্যের ধারা সূচিত না হয়ে থাকলে হঠাৎ করেই মঙ্গলকাব্য বাঙালির সাহিত্য আসরে উপবেশন করে না। মঙ্গলকাব্যের সাহিত্য-উপদান পূর্ববর্তীকালের ব্রতকথা, পাঁচালীর মধ্যেই নিহিত ছিল এবং অষ্টাদশ শতকের পরেই মূলত বিশ শতাব্দীতেই রচিত হয়েছিল মনসামঙ্গলজাতীয় কাব্যধারা। সুতরাং বলা চলে, বাঙালি জীবনধারায় প্রবাহিত হয়েছে মঙ্গলকাব্যের প্রবাহধারা। শ্রীভূদেব চৌধুরীর মতে, বাংলাদেশ আর্য অধিকারভূক্ত হবার আগে থেকেই তখনকার আদিম জনগণ নিজ নিজ চিন্তা-ভাবনা ও জ্ঞান-বুদ্ধি অনুসারে তাদের সমাজ-ব্যবস্থা, আচার-ব্যবহার ও জীবন যাত্রা-পদ্ধতির অন্যান্য উপাদানের পুর্ণায়ত পরিকল্পনা করতে পেরেছিল। বলা বাহুল্য, ধর্মাদর্শ এবং দেবদেবীগণের পরিকল্পনাও তার থেকে বাদ পড়েনি।’
বঙ্গদেশে সেনদের রাজনৈতিক পরাজয়ের ফলে নদীয়াসহ নদীয়ার আশপাশের বঙ্গ সমাজের সব শ্রেণির সাম্প্রদায়িক লোক তাঁদের নিজ নিজ উপস্যদেবতার কর্তৃক প্রকাশ্যে করতে পারলেন এবং তাঁরা তাঁদের উপাস্য দেবতাদের গুণকীর্তন লিপিবদ্ধ শুরু করলেন তাঁদের মাতৃভাষায়। কেননা, ইতোপূর্বে সেন শাসনামলে লোকভাষা ও লোকদেবতা ছিল নিষিদ্ধ; বৈদিক দেবতা ও সংস্কৃতভাষা সেন শাসনামলের পূজ্য ও রাজমহিমান্বিত। সুতরাং এই সময়ে এসে এ অঞ্চলের সাম্প্রদায়গুলির নিজ নিজ উপাস্য দেবতার গুণকীর্তন করতে এবং দেবতার প্রাধান্য বিস্তার করতে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। ‘মঙ্গলকাব্যের উদ্ভব যুগের রচনাবলি দেখে মনে হয়- ঐ সময়ে মনসা, চণ্ডী এবং ধর্মের উপাসকেরাই এ বিষয়ে র্সবাপেক্ষা তৎপর হয়েছিল।’ তবে, শ্রীভূদেব চৌধুরী আরো বলেন, নানাপ্রকার অনার্য পরিকল্পনা থেকে উদ্ভূত এইসব দেবদেবী তুর্কি আক্রমনের অব্যবহিত পরবর্তী কালে জাতির মনস্তাত্ত্বিক দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করে আর্য সমাজে প্রতিষ্ঠালাভ করেছিল’ বলে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা মোটেই ঠিক না। কারণ, এই সব দেব-দেবী উপাস্য লোকেরা নিজেদের কখনোই আর্য বলে দাবী করেনি। এখানো তাঁরা নিজেদের সনাতনি বলেই মনে করেন। যা তাঁরা সন তারিখের পূর্ব থেকে পুরুষ পরম্পর সামাজিক রীতি নীতি হিসেবে পেয়ে আসছে বা করে আসছে। দ্বিতীয়ত: আর্যাবর্তের লোকেরা বা আর্যরা কখনোই বঙ্গীয় ব্রাহ্মণদের আর্যত্ব মেনে নেননি বলে জানিয়েছেন নীহাররঞ্জন রায় তাঁর ‘বাঙ্গালীর ইতিহাস আদি পর্ব’ গ্রন্থে। তৃতীয়ত: বঙ্গভূমির লৌকিকদেবতা, জৈন ও বৌদ্ধদের ধ্বংস করতে ত্রিপুরার রাজা ক্রিরিট (ধর্ম্মফা) মাত্র পাঁচঘর ব্রাহ্মণ আনিয়েছিলেন আর্যাবর্ত থেকে (বর্তমান পাঞ্জাব)। সুতরাং বলা চলে যে, সেন শাসনামলে বিদেশী সেন শাসকেরা ছাড়া বড়জোর দু’চার ঘর ব্রাহ্মণ এদেশে থাকলেও থাকতে পারে, যা সনাতনী বা লৌকিক ধর্মাচারীদের তুলনায় সামান্য। তাই বলা যায়, এ সময়ে লৌকিক (অনার্য) ধর্মাচারী লোকদের মনস্তাত্ত্বিক শক্তির জোরেই তাঁরা পরধর্ম গ্রহণ করেননি বরং সুযোগ পেয়েই তারা নিজ ধর্মের কীর্তন শুরু করেছেন এবং তা প্রচার করেছেন।
বঙ্গ অঞ্চলে প্রথমে জৈনধর্ম ও পরে বৌদ্ধধর্ম দর্শন প্রবেশ করে। এ সময়ে এ অঞ্চলে বৈদিক ধর্মদর্শন প্রবেশ না করলে জৈন ও বৌদ্ধ দর্শন শুরু থেকে বৈদিকধর্ম দর্শন ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরোধী ছিলো। বৌদ্ধ দর্শনে বঙ্গীয় লৌকিক ধর্মাচরণ প্রাধান্য বিস্তার করে। শেষপর্যন্ত এমন একটা সময় আসে তখন পূর্বভারতীয় তন্ত্র এবং তান্ত্রিকচারণের ফলে বৌদ্ধ দর্শন পিছু হঠতে থাকে। সে অন্য প্রসঙ্গ। এ দেশে ব্রাহ্মণ্য ধর্ম প্রবেশ মূলত সেনদের হাত ধরে, তাঁদের পূর্ববর্তী কোনো ব্রাহ্মণ্য ধর্মাবলম্বী শাসকের সন্ধান আপাতত বঙ্গীয় অঞ্চলে মিলে না। সেনেরা বঙ্গ অঞ্চলের সামান্য একটা অংশের শাসক ছিলেন এবং তাঁরা তাঁদের অঞ্চলে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের প্রচার-প্রসার করতে গিয়ে যুগযুগান্তরের বঙ্গীয় ধর্ম ব্যবস্থাসহ সামাজিক রীতি নীতির উপর যে জুলুম শুরু করে, তাই ছিল তাঁদের কাল। অবশ্য ব্রাহ্মণ্যবাদী ঐতিহাসিক এবং সাহিত্যিকেরা সেনদের সামাজিক অবক্ষয় চাপা দেবার চেষ্টায় সচেতন ছিলেন। এমনকি, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে- অম্বিকাচরণ ঘোষ, যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত প্রমুখ ঐতিহাসিকেরা সেনদের সামাজিক ব্যভিচার ধর্মীয় প্রশংসার চোখে দেখেছেন। এ সব ব্যভিচার অন্যায়কে প্রসংশার চোখেই দেখা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- কৌলিণ্য প্রথা’র কথা। এ প্রথায় সামাজিক ব্যভিচার সর্বশেষ সীমায় পৌঁছালেও ব্রাহ্মণ্যবাদী ঐতিহাসিকের এ রীতি-ব্যবস্থার প্রসংশা করেই তাঁদের ইতিহাস রচনা করেছেন। বৈদিক যুগ থেকে মহাভারতের যুগ পর্যন্ত ভারতীয় নারী-সমাজ, সমাজে সর্বচ্চ মর্যাদাপ্রাপ্ত ছিলো। রমায়ণ যুগে এসে নারীর সতীত্বের প্রশ্ন উঠলো। ‘শ্বেতকেতু’ তাঁর পিতামাতার সঙ্গে বসেছিলেন। এমন সময় এক ব্রাহ্মণ এসে তাঁর মাকে যৌন আবেদন করে এবং যৌনক্রিয়ার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনাকে শ্বেতকেতু ব্যভিচার বলে মনে করেন এবং পরবর্তী কালে তিনি ঋষি হয়ে পরনারীর পাণি প্রার্থিতা রোধকল্পে বিবাহ ব্যবস্থা প্রচলন করেন এবং সিঁদুর হয় বিবাহের চিহ্ন। সিঁদুর পরা কোনো নারীর পাণি প্রার্থি যেন আর কেউ না করেন। স্মৃতিযুগে এসে নারীর মর্যাদা ধ্বংস হয়ে পড়ে। নারী তখন শুধু সন্তান উৎপাদনের মাধ্যম মাত্র। আর তার কোনো পরিচয় যেন নেই এবং নারীর বিবাহ ব্যবস্থার আয়োজন হয় প্রথম রজঃ সময় থেকে। স্মৃতিযুগের শেষের দিকে এসে দেখা যায়, নারীর বিবাহ দিতে আদেশ করা হয়েছে ঋতু শুরুর আগেই। তা না হলে অবিবাহিত নারীর ঋতুরক্ত তাঁর পূর্বপুরুষ যারা পরলোকগত তাদের নাকি পানতে হবে। এসব সামাজিক ব্যবস্থাকে সেনেরা পুনরায় চালু করেন এবং কুলিন বৃদ্ধ’র কাছে অভাবি পিতা কন্যা দানে বাধ্য হয়। শ্রীভূদেব চৌধুরী মতে, এ সময়ে অভিজাত সমাজের মধ্যেই ব্রাহ্মণ্য ধর্মাচরণের প্রতাপ ও মহিমা অনেকটাই সীমাবদ্ধ ছিল। বিশেষভাবে কোনো রাজসভার বিদগ্ধ পটভূমিকায় বাংলাদেশে ব্রাহ্মণ্য ধর্ম সংস্কারের সার্থক অভূত্থান ও বহুল বিস্তার ঘটেছিল; অন্যদিকে, এ সময়েই জৈন-বৌদ্ধ ধর্মের স্বল্পাবশেষ লোক-জীবনে সহজিয়া সাধনার তলানির মধ্যে এসে আত্মগোপন করেছিল।’ এই উদ্ধৃত অংশ থেকে বুঝা যায়, ব্রাহ্মণ্য ধর্ম জনসাধারণের কাছাকাছি পৌঁছাতে না পারলেও শাসকদের নিকটবর্তী জনদের কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার অভিপ্রায়ে তারা তাদের প্রসংশিত সমাজ ব্যবস্থা জনসাধারণের মধ্যে চালু করে হীনস্বার্থ চরিতার্থ করে, তারমধ্যে অন্যতম হলো এই কৌলিণ্য প্রথা। যা দ্বারা কুলিন ব্রাহ্মণ কুমারী নারীর দেহ স্বাদ এবং অর্থ দুটিই ভাল পেয়েছে। রাজভাষা বাংলা না হয়ে সংস্কৃতভাষা হওয়াও ছিল শাসক এবং জনসাধারণের দূরত্বের অন্যতম প্রধান আর একটি কারণ। আর ঠিক এ সময় তলানিতে তলিয়ে যাওয়া আত্মগোপনকারী বাঙালি সনাতনী শক্তি, শাক্ত, বৈশ, শৈব্য, জৈন, বৌদ্ধসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উদ্ধারের জন্যে ইখতিয়ার কে বঙ্গে ডেকে আনানো হয়। সেন শাসনামলের সেই চরম মহুর্তে বঙ্গীয় বৃহৎজনগোষ্ঠীর ভেঙ্গে পড়া আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, সর্বোপরি যুগযুগান্তরের প্রচলিত লৌকিক ধর্ম রীতি-নীতিকে নতুন করে গঠনের চেষ্টা করা হয়। বখতিয়ারের নদীয়া বিজয়ের ফলে সমাজের উচু নীচু নির্বিশেষে বাঙালি জাতি সেদিন আত্মশক্তিতে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল। নিতান্ত আহারের মতো দুর্বলের একমাত্র আশ্রয় হয়েছিল দীর্ঘ দিনের অবহেলীত লৌকিক দেব-দেবী আর তাঁদের সেই দেবতা-দেবীর কীর্তনের মাধ্যমও হয়েছিল দীর্ঘ দিনের অবহেলীত মাতৃভাষা বাংলায়। মাতৃভাষায় জীবনাচরণ ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় সুযোগ সেনদের পরাজয়ের মধ্যদিয়েই ঘটেছে এবং ততদিনে কৈরব নরকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে বাঙালি কবি কৃত্তিবাস রামকথা রামায়ণ বাংলাভাষায় অনুবাদ করেছেন।
মানুষ সৃষ্টির প্রথম দিন থেকেই দৈবশক্তির আরাধনা করে দেবতাদের দ্বারস্থ হয়েছে এবং মানুষ তাঁদের দেব-দেবীর প্রসংশা গীত করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এসেছে মঙ্গলকাব্যগুলি। এতে যেসকল দেব-দেবীর প্রসংশা গীত হয়েছে তাঁরা কেউ-ই বৈদিক বা ব্রাহ্মণ্য ধর্মের দেবতা নয়। সেন শাসনের ভয়ে এসব অবৈদিক, ব্রাহ্মণ্যধর্মবর্জিত দেব-দেবীরা ঘরের চৌহদ্দির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ঘরের মেয়েরা ব্রতকথা’য় সংসারের মঙ্গলার্থে তাঁদের তপ-জপ করত হাজার হাজার বছর ধরে। সুতরাং ব্রাহ্মণ্য ধর্মবাদী ঐতিহাসিকদের দাবি অযৌক্তিক এবং গোপন স্বার্থসন্ধানি। তাদের অনেক বাক্য সাম্প্রদায়িক বিষ ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে যা মনে করি, তা হলো- এসব পুরাতন অবিবেচক-মানুষের সামাজিক মূল্যহীন সমাজ ব্যবস্থা বঙ্গীয় সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ফলে অব্রাহ্মণ বাঙালি এবং সেনদের বাঙালি সেনা সদস্যরা উদ্যোগী হয়ে উত্তর ভারত থেকে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ারকে ডেকে পাঠিয়ে দিলেন। বাঙালির সমাজ ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্যে। যে কারণে, মাত্র আঠার জন সেনা সদস্য নিয়ে বখতিয়ার নদীয়া অঞ্চল দখল করতে পেরেছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অস্ত্র ধরা হয় নি। রক্ত ঝরা তো অনেক দূরের কথা, একটি লোমও কারো পড়েনি। সেনদের পরাজয় নিশ্চিত করেছিল বাঙালিরা, তাই শূন্যপুরাণের বাঙালি কবি খিলজিকে ঈশ্বরের আশীর্বাদরূপে দেখেছেন। ব্রাহ্মণ্য ধর্মানুযায়ী সেনদের নদীয়াতে রাজনৈতিক পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় ও বিদেশী যে ক’জন ব্রাহ্মণ ধর্মানুযায়ী এদেশে যে ক’জন ব্রাহ্মণ্য ধর্মানুযায়ী এদেশে ছিল তারা বৃহৎ জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় উত্থানে চেপে নিজেদের টিকিয়ে রাখতেই আর্যদের পালনিয় ব্রাহ্মণ্য ধর্মের সঙ্গে অব্রাহ্মণ লৌকিক ধর্ম মিশিয়ে নিজেদের গা বাঁচিয়েছেন, তাই এখন বঙ্গ দেশে ব্রাহ্মণদের ‘গাজন’ কিংবা ‘শক্তি’র উপাসনালয়ে যেতে বাধা নেই- জাতও যায় না। বরং এখন এমন একটি পরিস্থিতি এদেশে সৃষ্টি হয়েছে যে, সনাতনী বা ব্রাহ্মণদের বিবাহ অনুষ্ঠান ব্যতিত কোনো আচরণীয় অনুষ্ঠানেই আর ব্রাহ্মণ্য ধর্মেও কোনো প্রচলন টিকে নেই। সুতরাং এদেশে ব্রাহ্মণ থাকলেও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের কোনো কিছুই টিকে থাকেনি।
মঙ্গলকাব্য রচনার একেবারে প্রাথমিক দিকে এর কাঠামোর রূপ প্রাচীন সংস্কৃত পুরাণের আদর্শ সচেতনভাবেই অনুসৃত হয়েছিল, এমন সিদ্ধান্তের অভ্যন্তরীণ প্রমাণ আছে। মঙ্গলকাব্যের প্রারম্ভে ‘বন্দনাংশ’ পুরাণের বহুদেবতা বন্দনার আদর্শেই হয়েছে। ঐ অংশে বিভিন্ন দেবতার মাহাত্ব প্রকাশ উপলক্ষ্যে পৌরাণিক শ্লোকের ভাব, এমনকি, অনেক ক্ষেত্রে ভাষাগত ঐতিহ্যকেও অনুবাদ করার চেষ্টা করা হয়েছে। মঙ্গলকাব্যের সৃষ্টিতত্ত্বও অনেকাংশে পৌরাণিক সৃষ্টিতত্ত্বের আদর্শানুগ। অনুরূপ প্রসঙ্গ যেখানে প্রধানভাবে আর্যতের ঐতিহ্যকে অনুকরণ করেছে, সেখানেও সৃষ্টিতত্ত্ব বর্ণনার মূল কাঠামোটি পৌরাণিক প্রকরণেরই অনুবর্তী।
আপনার মতামত লিখুন :