মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়
আনোয়ার সাঈদ
আজ থেকে একশ বাষট্টি বছর পূর্বে বাংলা ভাষার প্রথম ঔপন্যাসিক প্যারীচাঁদ মিত্র ওরফে টেকচাঁদ ঠাকুর মদ্যপানের কুফল সম্পর্কে এই ব্যাঙ্গাত্মক গ্রন্থটি রচনা করেছিলেন। গ্রন্থের একজায়গা থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি,
"মদের অদ্ভুত শক্তি। যে ব্যক্তি পান করে সে দুধকে জল বলে। কলিকাতায় কোন বুনিয়াদি মাতালের বাটিতে চাকর পস্রাব করিতেছিল, মাতাল বাবুর মস্তকে পড়িলে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন আমার মাথায় কি পড়িল? পরে শুনিলেন পস্রাব,তখন আপনি কহিলেন তবে ভালো আমি বোধ করিয়াছিলাম জল।"
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবং অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সুদীর্ঘ দেড় শতাব্দী পরেও এই গ্রন্থের প্রাসঙ্গিকতা কিছুমাত্র কমেনি। তৎকালে কলকাতার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, উঠতি পুজিপতি ধনিক শ্রেণির নানা সামাজিক অনাচার বিশেষ করে ইংরেজ তথা পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ করতে গিয়ে মদ্যপানের ব্যাপক প্রসার লাভ করেছিল। কিংবদন্তি আছে মাইকেল মধুসূদন দত্ত পিতা রাজনারায়ণ দত্তের সঙ্গে গৃহেই একসাথে মদ্যপান করতেন।
অতিরিক্ত মদ্যপানে যে বুদ্ধিনাশ হয় সে সম্পর্কে প্যারীচাঁদ মিত্র লিখেছেন, "মদ্যপানে যে কেবল শরীর নষ্ট হয় এমত নহে, শরীরের সঙ্গে বুদ্ধি ও ধনও যায়।" কিন্তু বর্তমানে মানসম্মান এবং সম্ভ্রমও যায়। তখন অবশ্য ক্লাবসংস্কৃতি ছিল না। বাইজি বাড়ি বা কোঠাঘর অথবা ধনীদের বাগানবাড়িতে মদ্যপানের আসর বসতো। যুগ পাল্টেছে, ধরন বদলেছে বদলায়নি মানসিকতা, বদলায়নি রুচি।
আপনার মতামত লিখুন :