kalchitro
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

লায়লী মজনু কাব্যে সূফী প্রভাব


কালচিত্র | মাহমুদা তাসনিম প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২০, ০৭:০৩ পিএম লায়লী মজনু কাব্যে সূফী প্রভাব মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে অনুবাদকাব্য অন্যতম। মধ্যযুগীয় এ অনুবাদ সাহিত্যচর্চা বাংলা সাহিত্যে শ্রীবৃদ্ধি সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। চৌদ্দ পনেরো শতকের দিকে সংস্কৃত, ফারসি, আরবি, হিন্দি থেকে প্রচুর রচনা বাংলায় অনূদিত হয়েছে। যেমন: সংস্কৃত থেকে মহাভারত, রামায়ণ, ভাগবত। প্রণয়োপাখ্যান ধারায় পারস্য থেকে ইউসুফ-জোলেখা। ফারসি থেকে ‘লায়লী মজনু’ ‘গুলেবকাওলী’ ইত্যাদি। হিন্দি থেকে ‘পদ্মাবতী’ ‘সতীময়না ও লোরচন্দ্রানী’ ইত্যাদি। মধ্যযুগের আগে যত সাহিত্য রচিত হয়েছে সব ছিল ঈশ্বরের স্তুতি মূলক। সংস্কৃত, আরবি, ফারসি, হিন্দি কবি সাহিত্যিকগণ কাব্য রচনার সময় ধর্মীয়ভাব ধারার বিষয়টি মাথায় রেখে সাহিত্য রচনা করতেন। যার ফলশ্রুতিতে, তাদের কাব্যে প্রেম-বিরহ, মিলন হাসি কান্নার প্রকাশ ঘটত পরমাত্মা বা ঈশ্বর কেন্দ্রিক। ঈশ্বর বা পরমাত্মাকে আদর্শ হিসেবে রেখে তারা নানাভাবে কাহিনি সাজাতেন। কিন্তু এসবের মূলে ছিল ঈশ্বরের প্রেম। ঈশ্বরের এই প্রেম বিষয়ক সাহিত্য ইসলামের দৃষ্টিতে সুফিসাহিত্য নামে পরিচিত। সুফি সাহিত্য মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ ধারা যা সুফিতত্ত্বকে আশ্রয় করে উদ্ভূত ও বিকশিত হয়েছিল। এ ধারা সৃষ্টির প্রেরণা এসেছিল বহিরাগত সুফি সাধকদের কাছ থেকে। সুফি দর্শনের মূল ভিত্তি ব্যক্তিমানুষের ধ্যানস্থ কল্পনায় পরমাত্মা বা ঈশ্বরের সাথে মিলনাকাঙ্ক্ষা। আর সুফির প্রধান অবলম্বন হচ্ছে প্রেম। সুফি ভাবধারা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে একটি সর্বকালীন ও সর্বজাতিক দৃষ্টিভঙ্গি। অন্তরের পূর্ণ সত্ত্বাকে অনুভব করে দৈনন্দিন অহংকেন্দ্রিক ভোগলিপ্সার জগৎ হতে দিব্য আনন্দ, প্রজ্ঞা ও প্রেমের রাজ্যে বাস করাই একজন সুফির আকাঙ্ক্ষা। ‘লায়লী মজনু’ কাব্যের বিভিন্ন অংশে আমরা এ অনুভূতির দৃষ্টান্ত পাই।
Side banner