kalchitro
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ওষুধ বা প্রতিষেধক নয় করোনা রুখবে শক্তিশালী ন্যানোম্যাটেরিয়াল!


কালচিত্র | বিশ্ব বার্তা ডেস্ক প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২০, ১১:১০ এএম ওষুধ বা প্রতিষেধক নয় করোনা রুখবে শক্তিশালী ন্যানোম্যাটেরিয়াল!
বিশেষ ধরনের বায়ো-মলিকিউলার ন্যানোপার্টিকলস- রিসার্চ গেইট

 

ন ভে ল ক রো না ভা ই রা স

সারাবিশ্বের বুকে এক ভয়াল আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রাণঘাতী প্রাদুর্ভাব। এখন পর্যন্ত এর উৎপত্তি, বিস্তারের মাধ্যম, ওষুধ, প্রতিষেধক কোনোটি সম্পর্কেই সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা উদ্ভাবনে প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জনে সফল হয়নি বিজ্ঞান। মড়োনব্যাধি কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য দায়ি এই করোনার উৎস চীনে আকস্মিক ও আশ্চর্যজনকভাবেই কমে এসেছে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুহার। বিপরীতে এই ভাইরাসের আগ্রাসি থাবায় বিধ্বস্ত ইতালি, স্পেন, ফ্রান্সের মত উন্ন ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো। আর সম্প্রতি এদের সবাইকে ছাড়িয়ে বিনাশের প্রলয়ে নাস্তানাবুদ বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট।

শক্তিশালী এই দেশগুলো যেখানে করোনাভাইরাস ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে মাত্র তিন মাসের মধ্যেই মহামারীর প্রকোপ থেকে নিজেদের মুক্ত করে রীতিমত সাবলীল হয়ে ওঠেছে চীন। একারণে অনেকেরই সন্দেহ, চীনারা গোপনে করোনাভাইরাস মোকাবিলার পথ বের করে ফেলেছে। এ ধারণা যে একেবারে অমূলক নয়, সম্প্রতি তারই অর্থবহ ইঙ্গিত পাওয়া গেছে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত সংবাদপত্র দ্য গ্লোবাল টাইমস প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে।

রোববার (২৯ মার্চ) সংবাদমাধ্যমটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক টুইটবার্তায় জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস ঠেকাতে কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক নয় বরং নতুন একধরনের বিশেষ ন্যানোম্যাটেরিয়াল উদ্ভাবনে সাফল্য অর্জন করেছেন চীনা গবেষকরা। এই শক্তিশালী ন্যানোম্যাটেরিয়াল শুধু নভেল করোনা নয়, যেকোনও প্রকার ভাইরাস মোকাবিলায় নিজের সাফল্যের হার ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকরী হতে পারে প্রমাণে সক্ষমও হয়েছে।

চীনের একদল গবেষকের বরাত দিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি জানিয়েছে, নতুন ধরনের এই ন্যানোম্যাটেরিয়ালটি মানবদেহে প্রবেশ করে যেকোনও ভাইরাস শুষে নিতে বা অকার্যকর করে দিতে পারে। সাধারণত বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরিতে প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত উপাদান, রং, ফিল্টার এবং লুব্রিকেন্টসহ আরো বিভিন্ন কাঁচামাল ও স্বাস্থ্যসেবাতে ভোক্তাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ধরনের ন্যানোম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়। এর মাঝে রয়েছে স্বাস্থ্যখাতে ব্যবহৃত ন্যানোজাইমস নামক একপ্রকার ন্যানোম্যাটেরিয়াল, যা অনেকটা এনজাইমের মতো আচরণ করে। এই বিশেষ ধরনের ন্যানোজাইমসই সংক্রমণ সৃষ্টি ভয়াবহ করোনাভাইরাস বিধ্বংসী পরাশক্তি হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। 

চীনা সংবাদমাধ্যমের দাবি, এরইমধ্যে ওই গবেষক দল দেশটির বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে এবং এই ন্যানোম্যাটেরিয়াল দিয়ে মাস্ক ও পিপিই (পারসোনাল প্রটেকটিভ ইক্যুয়িপমেন্ট) বানানোর পরামর্শ দিয়েছে। যাতে করে এ সকল পণ্যের ন্যানোপার্টিকেল হিসেবে এই বিশেষ ন্যানোজাইমস মানবদেহে করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন ধরণের শক্তিশালী ভাইরাস বিরোধী প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক বর্ম হিসেবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করোতে পারে।  

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) মতে, বিজ্ঞানীরা এখনও ন্যানোম্যাটেরিয়ালের প্রকৃত সংজ্ঞা নির্ধারণ করেননি। তবে এটিকে ন্যানোমিটারে পরিমাপ করে এর আংশিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা। ক্যান্সার কোষ ধ্বংস বা এর থেরাপির কার্যকারিতা বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলোতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে বিশ্বাস তাদের।

এনআইএইচ জানিয়েছে, যদিও ন্যানোম্যাটেরিয়ালের যথেষ্ট উপকারিতা আছে, তবে মানবদেহ এবং পরিবেশের ওপর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী সে বিষয়ে এখনও খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। উদাহরণস্বরূপ তারা বলছে, রূপার মতো পরিচিত ধাতব কণাও ন্যানো-আকারে নিয়ে গেলে সেটি ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। সেক্ষেত্রে ঠিক কোন ধরণের ন্যানজাইমসকে পণ্য উৎপাদনের ন্যানম্যাটেরিয়াল পার্টিকল হিসেবে চীন ব্যবহার করোতে যাচ্ছে তাই এখন দেখার বিষয়। তবে একথা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার ভিতিতে প্রমাণিত যে, সঠিক প্রক্রিয়ায় শক্তিশালী ন্যানোজাইমসকে যদি এ কাজের জন্য প্রস্তুত করা যায়, তবে তা সত্যিই সাফল্যের উচ্চ সম্ভাবনা রাখে।

এসকে

Side banner